👉জড়া প্রকৃতিকে অতিক্রম করার উপায় -




👉জড়া প্রকৃতিকে অতিক্রম করার উপায়
দৈবী হি এষা গুণময়ী মম মায়া দুরত্যয়া।
মাম্ এব যে প্রপদ্যন্তে মায়াম্ এতাম্ তরন্তি তে।।
শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৭/১৪
অনুবাদঃ আমার এই দৈবী মায়া ত্রিগুনাত্মিকা এবং তা দুরতিক্রমণীয়া। কিন্তু যাঁরা আমাতে প্রপত্তি করেন, তাঁরাই এই মায়া উত্তীর্ণ হতে পারেন।
তাৎপর্যঃ গুণ শব্দের একটি অর্থ হচ্ছে রজ্জু। এর থেকে বুঝা যায় যে, মায়া এ সমস্ত রজ্জুর দ্বারা জীবকে দৃঢ়ভাবে বেঁধে রেখেছে। যে মানুষের হাত পা দড়ি দিয়ে বাঁধা, সে নিজে মুক্ত হতে পারে না। মুক্ত হতে হলে তাকে এমন কারো সাহায্য নিতে হয়, যিনি নিজে মুক্ত। কারণ, যে নিজেই বদ্ধ, সে কাউকে মুক্ত করতে পারে না। অর্থাৎ মুক্ত পুরুষেরাই কেবল অপরকে মুক্ত করতে পারেন। তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অথবা তাঁর প্রতিনিধি শ্রীগুরুদেবই কেবল বদ্ধজীবকে এই জড়-বন্ধন থেকে মুক্ত করতে পারেন। এই ধরণের পরম সাহায্য ব্যতীত জড়া প্রকৃতির বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া যায় না। ভক্তিযোগ বা কৃষ্ণভাবনা এই মুক্তির পরম সহায়ক হতে পারে। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন মায়াশক্তির অধীশ্বর। তাই তিনি যখন এই অলঙ্ঘনীয় মায়াকে আদেশ দেন কাউকে মুক্ত করে দিতে, মায় তৎক্ষনাৎ তাঁর সেই আদেশ পালন করেন। জীব হচ্ছে ভগবানের সন্তান, তাই জীব যখন ভগবানের শরণাগত হয়, তখন ভগবান তাঁর অহৈতুকী করুণাবশে পিতৃবৎ স্নেহে তাকে মুক্ত করতে মনস্থ করেন এবং তিনি তখন মায়াকে আদেশ দেন তাকে মুক্ত করে দিতে। তাই ভগবানের চরণ-কমলে শরণাগত হওয়াটাই হচ্ছে কঠোর জড়া প্রকৃতির কবল থেকে মুক্ত হওয়ার একমাত্র উপায়।

0 Comments